Search This Blog

Friday, October 9, 2015

কুড়িগ্রাম আর একটু কুড়িগ্রাম হয়ে উঠুক…

                                             কুড়িগ্রাম আর একটু কুড়িগ্রাম হয়ে উঠুক…
                                   ARIFUZZAMAN ARIF·FRIDAY, OCTOBER 9, 2015
সত্য কথাই তেঁতো আর অসুন্দর সদা অসত্য, অন্যায়। শ্যাখ সাহেবের বেটি আসছেন এ শহরে, সাজ সাজ রব চারিদিকে, অসমান রাস্তা সমান হলো, যে রাস্তায় শুভ্র শরতের ধূলো উড়তো সকাল বিকেল, সে রাজপথ বিটুমিনাসের তীব্র ঝাঝালো গন্ধের দখলে। তেলের খনির ইজারা দেয়া হয়েছে ডাইরক্যা পুটিদের, যাদেরকে লুঙ্গির উপর জাঙ্গিয়া কিংবা শার্টের উপর স্যন্ডোগ্যঞ্জি পড়তে দেখা যেতো হরহামেশাই। রং বে-রংয়ের ব্যানার-ফেস্টুন-বিলবোর্ড এর ব্যবসা জমজমাট। জাখলা সাহেব নৌকা বানাতে দিব্যি হম্বিদম্বি অবস্থা, এই রাজস্ব-ঐ- জেলারেল কর্মকর্তা বলছেন না না আর একটু বৈঠাটা বড় করলে ভাল লাগবে, হাজার হোক একটা মহাপ্লাবন হতে যাচ্ছে তো এই শহরে। মাথার উপর দু-একবার হেলিকপ্টার উড়তে দেখা যাচ্ছে।চার স্তরের সিপাহশালারা উপস্থিত যদি কোন পিঁপড়ে বা উঁইপোকা আবার নৌকার তলায় ফুটো করে। যে খেলার মাঠ গরু-ছাগলের দখলে ছিল তা এখন লাল ফাস্টক্লাস ইটের প্রলেপে ঢাকা। যে ফুটপাত নিম্নবিত্তের নিউমার্কেট ছিল তা এখন চুনোপুটিদের তোড়নের ভারে ২.৫ ইঞ্চি দেবে গ্যাছে। শ্যওলা ধরা পুকুর পাড়ে এখন ফাস্টফুডের দোকান বসেছে। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাড়িঁয়ে থাকা অট্টালিকা গুলো এখন রুচিশীল মনের বার্জার প্লাস্টিক পেইন্ট দিয়ে ঢেকে দেয়া হচ্ছে। দলের পেছরের সারিতে থাকা নেতারা এখন গিজগিজ করছে নৌকার আসেপাশে। আজ বিকেলে এই সব অভিজ্ঞতা নিয়ে বাসায় এসেই ভাবনার খাতায় বেখেয়ালী কলম চালালো ছেলেটা। কিছু প্রশ্ন বার বার ধোঁয়া তুলছিল ছেলেটার মস্তিষ্কে। আসলে কি এই? নাহ! শুধুমাত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয় যেদিক দিয়ে তার গাড়ি বহর নিয়ে যাবেন সেইটুকু অংশই এরকম চাকচিক্যময় করে তোলা হয়েছে। তাহলে তিনি কি দেখবেন? এ অঞ্চলের মানুষের কমতি কিসের? রাস্তাঘাট তো বেশ ভালই আছে নাকি? তাহলে কিসের আবার দাবি দাওয়া? কুড়িগ্রামের আসল অবস্থা গুলো প্রধানমন্ত্রী জানেন? নাগেশ্বরী-ভুঃঙ্গামারী সড়কের বেহাল দশার কথা জানেন? ভাঙনের ফলে চরাঞ্চলের জীবন জীবিকার কথা জনেন? বেকারদের মনের কথা জানেন? এইটুকু লিখেই ঘুমোতে গেল ছেলেটা। অত:পর ঘুমের মধ্যে একখানা মাইথলজিক্যাল ড্রিম দেখলো ছেলেটা।
“একদা এক দেবদূত এক নগরীর উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল, সহসা তিনি কি মনে করে জানি তার বাহন থামিয়ে নেমে আসলেন নগরীতে। নগরীর খেটে খাওয়াদের দল, ইট ভাঙা মাথার দল, পেপার বিক্রেতার দল, ভীক্ষুকের দল, এতীম অনাথের দল, পুষ্টিহীনদের দল, নদী ভাঙাদের দল, দ্বীপ চরের দল, বন্যার্তদের দল, ফসলহারা কৃষকদের দল, রিক্সাওয়ালাদের দল, ভুক্তভোগীদের দল, বেকারদের দল, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দল, কয়লা ব্যবসায়ীদের দল, বালুশ্রমিকের দল, শিক্ষিত বেকারদের দল সেই সাথে কাক পক্ষির দলও প্রত্যেকেই তাদের মনের কথা গুলো দেবদূতকে বললো। দেবদূতের মনে গভীর দয়ার উদ্রেগ হলো, তিনি নগরীর দূরাবস্থার কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে বর দিলেন:
নগরীর কেন্দ্রে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, নগরী থেকে দূরে দুর্গম চরাঞ্চলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার ভবন, বিচারালয়, রেল যোগাযোগ, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্র, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ইত্যাদি। দরদী দেবদূত এই সকল উপহার দিয়ে নগরবাসীর কাছ থেকে বিদায় নিলেন”।
ছেলেটা সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে অফিসে যাওয়ার সময় দেখল মোটর বাইকে তেল নেই। অগত্যায় রিক্সায় উঠে জনৈক ব্যক্তির কন্ঠে “মাজে মইধ্যে এ্যংকরি দুই একজন করি নেতা-কোতা আইসলে তো ভালই হইল হয়, আর যাই হোক রাস্তাঘাট গুল্যা ভালই হয়্যা গেইল বাহে এলা” শুনতে শুনতে অফিসের দিকে চলে গেলো। জয় হোক স্বপ্নের, সফল হোক জননেত্রীর আগমন।

আজ ঈদ, নগরীর ঘরে ঘরে আতংক!

       আজ ঈদ, নগরীর ঘরে ঘরে আতংক!
                                               ARIFUZZAMAN ARIF·SATURDAY, OCTOBER 10, 2015

“আজ ঈদ মদিনার ঘরে ঘরে আনন্দ। পথে পথে শিশুদের কলোরব। দলে দলে লোকজন ঈদগাহে যাচ্ছে। তাদের গায়ে নানান রংয়ের পোষাক। বাতাসে আঁতোরের গন্ধ…………..” বাল্যকালের স্মৃতির পুকুরে ডুব দিয়ে দেখুন না, প্রায় সবাই এই লেখাটি পড়েছিলাম প্রাথমিকের প্রথম শ্রেনীর “আমার বই” নামক বইয়ে। শাওয়ালের প্রথম আকাশের কোণে যখন হাসি মাথা বাঁকা চাঁদ খানা দেখা দিতো তখন হৈ হুল্লোর করে এ বাড়ী ও বাড়ী বলে বেড়াতাম “চাঁদ উঠেছে, চাঁদ উঠেছে”। মা-চাচী রা চেঁচামেচী শুনে বাইরে বেরিয়ে আসতো, তখন রেডিওতে খুব জোরে সাউন্ড দিয়ে ভাইয়া গান শোনাতে আহ্বান করতো “ও মোর রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশির ঈদ.............”। মায়েরা ব্যস্ত হয়ে পরতেন পিঠা, পায়েশ, স্যমাই রান্না ইত্যাদি আরো কতো কি...!!!! মদিনার সেই আনন্দ লেগে যেতো প্রতি পাড়ায় পাড়ায়। এ ঘর ও ঘর বেড়ানো , রাত জেগে ভোরের প্রত্যাশায় কান খাড়া থাকতো। কখন যে ভোরের আজান হবে আর কার আগে কে গোসল করবে এ নিয়ে প্রতিযোগিতা লেগেই থাকতো। আগে গোসল করতে পারলে সোওয়াব অনেক। কতোবার যে প্রথম হয়েছি, আবার কখনো প্রথম হতে গিয়ে অন্যের ঘারে লাফিয়ে পরেছিলাম পুকুরে তার হিসেব নেই।
কুড়িগ্রামের ঘরে ঘরে ঈদ। এবার মুহররম মাসের ১ তারিখে কুড়িগ্রাম শহরে একটি অন্যরকম ঈদ উদযাপন হতে যাচ্ছে। আজ কাল পরশু এভাবে ক্ষণ গনণা শুরু হয়েছে। পথে পথে নেতাদের কলোরব। দলে দলে লোকজন বলাবলি করছে। তাদের গায়ে শার্টের উপর স্যান্ডোগেঞ্জি, লুঙ্গির উপর আন্ডার অ্যয়ার। বাতাসে প্রেট্রোলের গন্ধ..........শহরের প্রাণ কেন্দ্রে দেখা যাচ্ছে নানান রংয়ের পোস্টার, ঝারবাতি ‍ইত্যাদি। মাইকে জোরে জোরে বাজানো হচ্ছে “..... ময়দানের জনসভায় যোগ দিন, যোগ দিন”। ছোট-বড়-হালকা-ভারী-মাঝারি-নেতারা বিভিন্ন ধরনের সংকুচিত-বর্ধিত সভার ব্যস্তদিন কাটাচ্ছে। কে কার আগে তোড়ন বসায়, কার তোড়ন হেলানো দোলানো নকশা করা, কার ছবি ভাল হয়েছে ইত্যাদি।
কিন্তু “দি উচ্ছেদ পান স্টোর” নামক পান বিক্রেতার ঘুম হারাম। তার এই ঈদ কোন ভাবেই তার ঘরে পৌছাচ্ছে না। করন দেশনেত্রী শেখ হাসিনার (প্রধানমন্ত্রী) আগমন উপলক্ষে কুড়িগ্রাম শহরের সাজ সাঝ ভাব থাকলেও এই মহানন্দক্ষণে তাদের দোকান-পাট, ব্যবসাপাতি, হোটেল-মোটেল, এখন বুলডোজার নামক স্যামাই খেয়ে ফেলেছে। খুশি ভাগাভাগি তো দুরের কথা, আজ রাতে তার ঘরে ভাতের হাড়ি উঠবে কিনা তা জানা নেই আমাদের। এই শহরের অধিকাংশ লোকই অতিদরিদ্রসীমার নিচে বাস করে । অভাবী নাগরিকদের কেউ কেউ রাস্তার দুপাশে পরে থাকা পতিত জমি ব্যবহার করে দোকানপত্র নিয়ে বসে দু-চার পয়শা কামাই রোজগার করে খায় বটে। কিন্তু আমাদের তা আর চোখে সইল না। নেত্রী যে রাস্তা দিয়ে যাবেন তার উভয় দিকের অবৈধ স্থাপনা সহ সকল স্থানের অবৈধ স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আগামী কাল আবার নতুন কোন অবৈধ স্থাপনা ভাঙা হবে। এভাবে অভিযান অব্যহত থাকবে। সুতরাং শহরের কিছু কিছু নাগরিকের মনে ঈদ ঈদ ভাব থাকলেও ঐসব উচ্ছেদ নামক পানবিক্রেতার মনে ঈদ পূর্বমুহূর্ত আনন্দ নয় আতংক!
তার পরও শেখ হাসিনার আগমন, শুভ বার্তা বয়ে নিয়ে আসুক কুড়িগ্রাম বাসীর। জয় বাংলা।
ছবিঃ KGM নাহিদ।

অনেকটা নিরবেই চলে গেলেন...

গীতিকার নায়ীম গহর আর নেই আমাদের মাঝে

‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো’, ‘নোঙ্গর তোলো তোলো সময় যে হলো হলো’, ‘পূবের ঐ আকাশে সূর্য উঠেছে’ -এর মতো সাড়া জাগানো গানের গীতিকার নয়ীম গহর আর নেই। মঙ্গলবার রাত সোয়া একটায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে হৃদরোগসহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় আক্রান্ত শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। স্বাধীনতা পদকপ্রপ্ত কালজয়ী এই গীতিকার অনেক দেশাত্মাবোধক গান লিখেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় লিখিত তার গানগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলো। গান লেখার পাশাপাশি একজন ঔপন্যাসিক, গায়ক, অভিনেতা ও নাট্য রচয়িতা ছিলেন তিনি। বিবিসি বাংলার ভাষ্যকার ও সংবাদ পাঠক হিসেবে কাজ করেছেন। গীতিকবি নয়ীম গহরকে ২০১২ সালে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। নয়ীম গহরের মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। তাকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

বিড় বিড় করে বলা অনুগল্পগুলো

বিড় বিড় করে বলা অনুগল্পগুলো
মনে মনে জিয়ে রাখা অনুগল্পগুলো
অনুগল্প - ০১ আমার ছোটবেলায় এরকম হতো, হঠাৎ ঘুম ভাঙ্গার পর খানিক সময় লাগতো যে, এখন কোথায় আছি? স্কুল জীবনে কোন কঠিন পরীক্ষার আগের রাতে মোটামুটি কম ঘুম হতো, হঠাৎ ঘুম ভাঙ্গার পর ভোর রাতে জেগে উঠেই দেখতাম কিছ্ছুই মনে নেই। মেসে থেকে পড়াশুনা করতে হয়েছিল বলে কলেজ ছুটিতে গ্রামে ফিরলে হঠাৎ মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙ্গার পর মনে হতো বুয়া ডাকছে, সময় লাগতো নিজেকে ফেরাতে যে, আমি কলেজে না বাড়ীতে আছি। গত শুক্রবার সকালে উঠে বেশ গম্ভীর ভাবে হাটাহাটি করে দাঁতব্রাশ করার সময় চোখ পরলো পত্রিকা স্ট্যানে। হকার সবে মাত্র পত্রিকা দিয়ে গেছে, কেউ এখনো ভাঁজ খোলেনি। প্রথম আলো। চিত্রসমেত শিরোনাম দেখে আঁতকে উঠলাম “ওমা একি? গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে আছি?” মদ্যপ অবস্থায় শিশুকে গালি ও গুলি করলো সয়ং সাংসদ!!! ০৩/১০/২০১৫খ্রি:
অনুগল্প - ০২ কয়েকদিন আগে গণমাধ্যমে দেখলাম শয়তান কে ঢিল ছুড়তে গিয়ে, মিনায় বহু হাজীর প্রাণ গেলো !!! তবে কি শয়তান………………!? (৫৭ ধারায় মামলা হতে পারে তাই শুণ্যস্থানে কিছু লিখলাম না) ০১/১০/২০১৫খ্রি:
অনুগল্প - ০৩ অফিসে চোখে পড়ার মত লম্বা চওড়া বস। স্বাস্থে মাশাল্লাহ বোয়াল ভোজী। তাঁর বিরুদ্ধে বলার সাহস নেই কারো। বস তো এরকমই হয়। কোন সহকর্মীর বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হই বা না হই, কোন গুনাগুন করি বা না করি বসের বিদায়ে বলতে শুনি “আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি আমাদের বসের মতো ভাল বস আর কোথাও পাবেন না, ইনিই আমাদের দেখা শ্রেষ্ঠ বস”(বক্তব্যের শুরু ও শেষ একই থাকে)